জাগো মানুষ, রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ

নারী ও শিশু ধর্ষণ ও সহিংসতা: বিচার চাই, নির্মূল কর

প্রকাশকাল: ১৬ মার্চ ২০২৫

ধারণাপত্র

প্রেক্ষাপট

দেশে নারী ও কন্যাশিশুর নির্যাতন ও ধর্ষণ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি এর মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে। ঘরে-বাইরে, কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্রই এর ভয়াবহ শিকার হচ্ছেন কন্যাশিশুসহ সকল বয়সী নারী। নৃশংসতার মাত্রা ও সংখ্যা বিবেচনায় সারা দেশে নারীর প্রতি সহিংসতায় দেশবাসী আতংকগ্রস্থ সময় অতিবাহিত করছে। এ পরিস্থিতি অগ্রহণযোগ্য। নারী ও কন্যাশিশুর নির্যাতন ও ধর্ষণ, আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না পাওয়া, বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা প্রভৃতি কারণে সামাজিক জীবনে নিরাপত্তাহীনতার পাশাপাশি ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হচ্ছে যা সমতাভিত্তিক বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থার অন্তরায়। নারীর প্রতি এ ধরনের আচরণ দূর করতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সুপরিকল্পিত কার্যক্রম গ্রহণ করা জরুরি। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী, যাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন অর্জন অসম্ভব। নারী ও শিশুর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য ও অধিকার হরণ বিলোপ সাধনে বাংলাদেশ অঙ্গীকারবদ্ধ। অভূতপূর্ব রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সূচিত বৈষম্যবিরোধী ‘নতুন বাংলাদেশে’ এ অঙ্গীকারের গুরুত্ব বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়নের নিশ্চিয়তা প্রদানে বাংলাদেশ জাতীয় পরিমন্ডলে সংবিধানের আলোকে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট আইন ও বিধিমালা প্রণয়নের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করেছে, যার মধ্যে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও), নারী উন্নয়ন নীতিমালা, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন প্রভৃতি অন্যতম। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮(৪) অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে, নারী বা শিশুদের অনুকূলে বিশেষ বিধান প্রণয়নে রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করা যাবে না। পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ৫ এ নারীদের সম-অধিকার এবং তাদের ও কন্যাশিশুদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। নারী-পুরুষের সমতার আন্তর্জাতিক সূচকে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ অবস্থানে থাকলেও ২০২৪ এ ৪০ ধাপ অবনমন হয়েছে, যার ধারাবাহিকতায় নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার সাম্প্রতিক প্রবনতা ব্যাপক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার সাথে যুক্ত হয়েছে ধর্মান্ধতা ও ধর্মীয় অপব্যাখ্যা পুঁজি করে নারী ও কন্যাশিশুর বহুমাত্রিক অধিকার হরণ। শিক্ষাঙ্গণসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে চলমান এ প্রবনতা চরম উৎকণ্ঠাজনক।

অন্যদিকে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি সুপারিশ পুলিশের অব্যাহত স্বৈরতান্ত্রিক চর্চার প্রতিফলন, যা অধিকতর উদ্বেগজনক। ধর্ষণের সংবাদ কম করে প্রচারের পরামর্শ দিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বাস্তবে ধর্ষকের সুরক্ষার পথ প্রশস্ত করতে চাইছেন। আমরা এর জোর প্রতিবাদ জানাই।

পুরো ধারণাপত্রের জন্য এখানে ক্লিক করুন