১১ নভেম্বর ২০২১
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন ডলার তহবিল বিষয়ে কপ-২৬ এর খসড়া ঘোষণায় সুর্নিদিষ্ট পথরেখা না থাকায় টিআইবির উদ্বেগ:
অর্থায়ন নিশ্চিতে বাংলাদেশসহ সিভিএফ প্রতিনিধিদের শক্ত অবস্থান নেবার আহবান
ঢাকা, ১১ নভেম্বর ২০২১: স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে কপ-২৬ সম্মেলনে চলমান আলোচনার ভিত্তিতে প্রকাশিত প্রাথমিক খসড়া ঘোষণা জলবায়ু পরিবর্তন বা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ঠেকাতে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতির বদলে আবারো কথার ফুলঝুরি নিয়ে হাজির হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে বছরপ্রতি ১০০ বিলিয়ন ডলার তহবিল প্রদানের বিষয়টি উন্নত দেশগুলোর কথার মারপ্যাঁচে এড়িয়ে যাবার প্রবণতায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একইসাথে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর জন্য অভিযোজন তহবিলের বরাদ্দ বাড়ানো এবং প্রতিশ্রুত জলবায়ু তহবিল প্রদান ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশসহ ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ)এর প্রতিনিধিদের আরও শক্ত অবস্থান নেবার এবং ধনী দেশসমূহকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহবান জানিয়েছে সংস্থাটি।
আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জলবায়ু সম্মেলনের প্রাথমিক খসড়া ঘোষণা সম্পর্কে হতাশা জানিয়ে বলেন,কপ-২৬ সম্মেলন শুরুর আগে বিশ্ব নেতারা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে একটি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে যে উচ্চাশা তৈরি করেছিলেন, তার বড় অংশই পূরণ হয়নি। বরং ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস উষ্ণায়ন লক্ষ্যমাত্রাকে অযৌক্তিক ও অনৈতিকভাবে ২ ডিগ্রীতে নিয়ে যাবার চেষ্টা করা হচ্ছে। জ্বালানি হিসেবে কয়লার ব্যবহার বন্ধে সুনির্দিষ্ট টাইমলাইন রাখা হয়নি। একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য অভিযোজন এবং ক্ষয়-ক্ষতি (লস এন্ড ড্যামেজ) সহ প্রতিশ্রুত শত কোটি ডলার বাৎসরিক জলবায়ু তহবিল প্রদানের নিশ্চয়তা দিতে উন্নত দেশগুলো আবারো ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। অথচ প্যারিস চুক্তির আওতায় ২০২০ সাল থেকে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের কথা ছিলো। এখন পর্যন্ত সর্বসাকুল্যে ৮০ বিলিয়ন ডলার দেয়া হয়েছে যার মধ্যে সর্বোচ্চ ২০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু তহবিল বলে নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে। প্যারিস চুক্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য অভিযোজন খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবার কথা বলা হলেও জলবায়ু অর্থের মাত্র ২৫ শতাংশ এ খাতে পাওয়া গেছে, আর নতুন খসড়ায় যা বৃদ্ধিতে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি যেটিজলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে উন্নত দেশগুলোর প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকাকে আবারো সামনে নিয়ে এসেছে।”
প্রকাশিত খসড়ায় ক্ষয়-ক্ষতি (লস এন্ড ড্যামেজ) সংক্রান্ত প্রসঙ্গটি আলাদা করে উল্লেখ করাকে একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করে ড. জামান বলেন, প্যারিস চুক্তিতে লস এন্ড ড্যামেজকে অভিযোজন থেকে আলাদা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও উন্নত দেশগুলো জলবায়ু অর্থায়ন সংক্রান্ত আর্থিক প্রতিবেদনে দুর্যোগের ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবেলায় প্রদত্ত সহায়তা একটি পৃথক কলামে উল্লেখ করতো না। বরং এবার বিষয়টি নিয়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলো জোর দাবি তুললেও, উন্নত দেশগুলোও দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই যুক্তি দেখিয়ে লস এন্ড ড্যামেজ মেকানিজমের আওতায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষতিপূরণের অর্থ পাওয়া নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে। আমরা আশা করব এই অবস্থান থেকে সরে এসে উন্নত দেশগুলো ক্ষতিপূরণের বিষয়টিতে একমত হবে এবং দ্রুত এর বাস্তবায়ন হবে। এর মাধ্যমে জলবায়ু অর্থায়নের বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের পাশাপাশি উন্নত দেশসমূহের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”
ধন্যবাদসহ,
শেখ মন্জুর-ই-আলম
পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন)
মোবাইল: ০১৭০৮৪৯৫৩৯৫
ই-মেইল:manjur@ti-bangladesh.org