লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের ধবলগুড়ি গ্রামের ছিটমহল এলাকার বাসিন্দা দরিদ্র মাছের উদ্দিন। সাবেক ১২৩ নং বাঁশকাটা ছিটের তার এক টুকরো জমির ভোগ দখল কেড়ে নেয়ার জন্য পার্শ্ববর্তী প্রভাবশালী এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে তাকে শারিরিক ও মানষিকভাবে অনেক নির্যাতন করে আসছে, এমনকি জীবনে মেরে ফেলারও চক্রান্ত করে। ছিটমহল অন্তভর্‚ক্ত জমির দখলস্বত্ত¡ থাকা সত্তে¡ও এবং প্রাক খতিয়ানে ভুক্তভোগীদের নাম থাকলেও সেটেলমেন্ট অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারীর যোগসাজসে প্রতিপক্ষ গ্রæপ নিজেদের হালনাগাদ খতিয়ান তৈরীর জন্য একই দাগে অন্যের নামে কিছু অংশ দখল দেখিয়ে দিয়ে দেয়ার পায়তারা চালাচ্ছে। প্রতিপক্ষ গ্রæপ বেশ কয়েকবার ফসল কেটে নিয়ে যেতে চাইলে মারামারি হয়। অনেকদিন পর্যন্ত লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল এবং রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতলে চিকিৎসা নেয়ার পর মোটামুটি সুস্থ হয়ে বাড়ি এলেও একের পর এক মামলায় জর্জরিত করা হয় মাছের উদ্দিনকে। সংশ্লিষ্ট থানায় প্রতিপক্ষ গ্রæপের করা মামলায় পরিবারের সদস্যসহ মাছের উদ্দিনকে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরন করা হয়। কিছু দিন পর জামিনে বের হয়ে আসলে তারা আবার হামলার শিকার হন এবং মারাত্মক আহত হয়ে পুনরায় হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। ভুক্তভোগী দরিদ্র লোকটি স্থানীয় মাতব্বর/দেওয়ানী, থানা-পুলিশের নিকট গিয়ে হয়েছেন অবহেলার শিকার! উল্টো কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য প্রভাবশালী ব্যাক্তরি পক্ষ নিয়ে দরিদ্র মাছের উদ্দিনসহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে বেশ কয়েকবার থানায় নিয়ে আটকে রাখে এবং ভয়ভীতি দেখায়। মাছের উদ্দিন কোর্টে মামলা করলেও দরিদ্র হওয়ায় উকিলের টাকাসহ মামলার অন্যান্য খরচ ঠিকমত দিতে না পারায় মামলা চালানো তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ছে। এমতাবস্থায় ০৯/০৩/২০১৭ তারিখ টিআইবি’র এলাক এ এসে বিস্তারিতভাবে এসব ঘটনা খুলে বলেন এবং এলাকের পরিপূর্ণ সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন মাছের উদ্দিন।
এলাক এর প্যানেল আইনজীবি জনাব রফিকুল ইসলাম আলম এর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে অভিযোগকারীকে এই মর্মে পরামর্শ দেয়া যে, খতিয়ানের হালনাগাদ প্রিন্ট কপি বের হলে তারপর বুঝা যাবে উক্ত দাগের অংশ অন্য কাউকে দেয়া হয়েছে কিনা। যদি অন্য কারো নামে দেয়া হয় তখন নাম এবং জমির পরিমান সংশোধনের জন্য পরবর্তীতে আইনী পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রতিপক্ষ পুনরায় ফসল কেটে নিতে চাইলে বা হামলার শিকার হলে থানায় এবং ইউএনও মহোদয়ের নিকট অভিযোগ দেয়ার জন্য বলা হয়। থানার ওসি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে এসপি বরাবর উক্ত অভিযোগ দাখিল করার পরামর্শ দেয়া হয়। পাশাপাশি দরিদ্র বিধায় মামলার আইনী সহযোগিতার জন্য জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়।
এলাকের পক্ষ থেকেও জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে যোগাযোগ করে দরিদ্র মাছের উদ্দিনের মামলাগুলো পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। পাশাপাশি রংপুর বিভাগীয় সেটেলমেন্ট অফিসের জোনাল অফিসারের সাথেও যোগাযোগ করে পাটগ্রাম উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারীর যোগসাজসের মাধ্যমে অবৈধ দখল দেখিয়ে হাল খতিয়ান তৈরির কথা উল্ল্যেখ করে ভুক্তভোগীর বিষয়টি জানানো হয়। জোনাল অফিসার ভুক্তভোগীকে টিআইবি’র রেফারেন্স নিয়ে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রসহ লালমনিরহাট থেকে রংপুর গিয়ে তার অফিসে দেখা করার জন্য যেতে বলেন এবং কোন ধরনের অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করবেন বলে আশ^াস প্রদান করেন।
জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে মাছের উদ্দিনের মামলাগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে হঠাৎ করে একদিন প্রতিপক্ষের করা মামলায় মাছের উদ্দিনের মেয়ের স্বামীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এমতাবস্থায় মাছের উদ্দিন এলাকে ফোন করলে পুনরায় জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে ঐ দিনই একেবারে দিনের শেষ সময়ে জামিনের ব্যাবস্থা করা হয়। প্রতিপক্ষের করা বেশ কয়েকটি মামলার মধ্যে একটি মামলায় গত ২৭/০৪/২০১৭ তারিখে মাছের উদ্দিনের পক্ষে আদেশনামা প্রদান করে মামলাটি খারিজ করে দেন বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট।
অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাছের উদ্দিনকে সম্পূর্ণ সহযোগিতার আশ^াস প্রদান করেন এবং থানার ওসি সাহেবও মাছের উদ্দিনকে হয়রানি করার জন্য অসাধু পুলিশ সদস্যদেরকে কঠোর ভাষায় সতর্ক করে দেন।
পাশাপাশি রংপুর বিভাগীয় সেটেলমেন্ট অফিসের জোনাল অফিসার মাছের উদ্দিনকে জানান, কাগজ পত্র হালনাগাদের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে, হালনাগাদকৃত খতিয়ানে ভুক্তভোগী অভিযোগকারীর নামে জমির অংশে অসামঞ্জস্য দেখা দিলে পরবর্তীতে তা সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগীতা দেয়া হবে।
...................................................................................