মাস খানেক আগে আরিফের ফোন।
- ভাইয়া, আমার এক ভাই ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ দিবে কিন্তু পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না।
- তাহলে ছাড়পত্র নাও।
- পিয়ন ঘুষ চায়।
- তুমি কি বাগেরহাট, থাকলে কলেজের সামনে চলে আসো।
আরিফ এসে যা জানালো তা হল-
তাদের প্রচার পত্রে যে ফোন নম্বর দেওয়া সেখানে ফোন করলে যে ব্যক্তি ফোন রিসিভ করেন সে ১২,০০০ টাকা দাবী করেন। অফিসে স্ব-শরীরে গেলে পিয়ন জানায়, আপনি তো গরীব মানুষ কারো কাছে কিছু বলা লাগবে না ১৪,৫০০ টাকা দিবেন কাজ হয়ে যাবে। শুনে টিআইবি বাগেরহাটের এরিয়া ম্যানেজারকে বিষয়টি অবহত করলাম। তিনি ঐ অফিসের বসের সাথে কথা বলার পরামর্শ দিলেন।
বসের সঙ্গে দেখা করলে ব্যস্ততার জন্য পিয়নকে কি কি কাগজ লাগবে বুঝিয়ে দিতে বললেন। পিয়ন এবার হার্ডলাইনে, কাগজ তিনি সংগ্রহ করতে পারবেন না বলে জানালেন। এবং আবারও টাকার দাবী করলেন।
এবার দেখলাম, আমাদের হাত দিতে হয়। যদিও আগে বশির ভাইয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে যে, এবার কাজ না হলে আমি আর বশির ভাই ঐ অফিসে যাবো।
কাজ এবারও হলো না বিধায় আমি, বশির ভাই, আরিফ ও ছাড়পত্র প্রার্থী ঐ অফিসে গেলাম। উপ পরিচালক মহোদয় অফিসে নাই। বশির ভাই ফোন দিলে দশ মিনিটের মধ্যে আসলেন। বিষয়টি আমরা শেয়ার করলাম ঘুষের ব্যাপারটা উহ্য রেখে। তিনি কি কি কাগজ লাগবে, কিভাবে তৈরি করতে হবে এটা বুঝিয়ে দিলেন, আবেদনপত্র দিতে বললেন পিয়নকে।
পিয়ন বলে ম্যাপ অটোক্যাড ব্যবহার করে করতে হবে, আবেদন পরের দিন আসলে নিয়েন ইত্যাদি। বসের দিকে ফিরলে তিনি বললেন, ম্যাপ হাতে করলেই হবে। আবেদনপত্র এখন-ই প্রিন্ট করে দাও। তিনি ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন আনতে বললেন।
সেখানে পৌঁছানোর আগেই পিয়ন ফায়ার সার্ভিসে ফোন করে সতর্ক করেছে। ফায়ার সার্ভিস ঝামেলা ছাড়াই অনুমোদন দিয়েছে বলে শুনেছি পরে।
যখন ঐ ব্যক্তি ছাড়পত্র আনতে গিয়েছিলেন, তখন নাকি পিয়ন বলেছে - আপনি এতো ঝামেলা করবেন, আগে বলতেন।
উত্তরে তিনি নাকি বলেছেন, আমি অশিক্ষিত, কিছু বুঝি না, তাই বলে কি আমার ছোট ভাইরা কিছু বোঝে না?
তিনি নির্ধারিত ১,৫০০ টাকা ফি ও ভ্যাট দিয়ে আবেদন পরবর্তী যথা সময়ে সনদ পেয়েছেন, শুনে খুব ভাল লাগছে। একজন মানুষকে তো সাহায্য করতে পেরেছি, বাগেরহাট সনাকের জন্য এটা একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।