এম এ বাবর: ভূমি ব্যবস্থাপনায় রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন করা হলেও সমস্যা এখনো কাটেনি। ভূমিসংক্রান্@ নাম প্রস@ব, জরিপ প্রতিবেদন (সার্ভে রিপোর্ট), নামজারি ও খাজনা দাখিল থেকে শুরু করে সবকিছুতেই চলে ব্যাপক অনিয়ম। এসব অনিয়ম প্রতিরোধে সরকার আগামী মার্চ মাস থেকেই ভূমি হস@ান্@র দলিলের নিবন্ধন পদ্ধতি ডিজিটাল করার ঘোষণা দিয়েছে। জানুয়ারি থেকেই পরীক্ষাম–লকভাবে ঢাকার তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কম্পেলেক্সে পাঁচটি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, ঢাকার সদর রেকর্ড রুম ডিজিটাল কর্মস–চির আওতায় আনা হবে। এ লক্ষ্যে চলতি বছরেই প্রয়োজনীয় কম্পিউটার ও সফট্ওয়্যার কেনার কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে এ কাজে সম্পৃক্ত একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা জানান, ভূমি জরিপ ও নিবন্ধন ডিজিটালকরণের যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, এতে ভূমি সংক্রান্@ অনিয়ম-দুর্নীতি কমবে না। কারণ কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে জমির পুরোনো কাগুজে রেকর্ডপত্র স্ক্যান করে রাখালেই সার্বিক ভাবে এর সুফল জনগণ পাবে না। আর পুরোনো রেকর্ডপত্রে যেসব ত্রুটি রয়েছে তাও সেভাবে থেকে যাবে। এছাড়া এ পদ্ধতিতে ভূমির তথ্যাদি ভালোভাবে সংরক্ষিত হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিজিটাল পদ্ধতির সুফল পেতে ভূমির রেকর্ডপত্রসহ সবধরনের তথ্যাদি কম্পিউটারাইজড (ডিজিটাল) করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে চলমান ভূমির রেকর্ডপত্র রক্ষা, রেজিস্ট্রেশন, নকশা প্রস্তুত ও জাল-জালিয়াতির ফলে ভূমি নিয়ে বিরোধ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আর এসব বিরোধের জের ধরেই চলে এখাতে ব্যাপক অনিয়ম। তাই বিদ্যমান কাগুজে পদ্ধতিতে তথ্যদি রেখে কম্পিউটার ব্যবস্থায় কিছু কাজকর্ম করেই ভূমি অফিসের দুর্নীতি কমানো সম্ভব নয়।
তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি মোস@ফা জব্বার বলেন, ‘ভূমি সংক্রান্@ সব ধরনের তথ্যাদি ডিজিটাল পদ্ধতি ছাড়া এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় নেই। কারণ, ভূমির কাজকর্ম একটি বা দুটি অফিসে সম্পন্ন হয় না। এমনকি একটি মন্¿ণালয়েও ভূমির কাজকর্ম সীমাবদ্ধ নয়।’
তিনি জানান, ভূমি মন্¿ণালয়, আইন ও বিচার মন্¿ণালয়, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর, ভূমি আপীল বোর্ড, ভূমি সংস্কার বোর্ড, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, আঞ্চলিক সেটেলমেন্ট অফিস, জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, উপজেলা ভূমি অফিস, উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস, সাব রেজিস্ট্রার অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ভূমি সংক্রান্@ কাজ হয়। তাই দেশের যে কোন প্রান্@ থেকে তথ্যাদি এবং দ্রুত সেবা পেতে ভূমিসংক্রান্@ সব ধরনের নকশাসহ বিদ্যমান এনালগ (কাগুজে) পদ্ধতিকে ডিজিটাল করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘শুধু ইন্টারনেটে তথ্য রাখলেই দেশের সাধারণ মানুষ সেসব তথ্য নিজেদের কাজে লাগাতে পারবে তেমনটি ভাবার কোনো কারণ দেখি না। বরং আমি মনে করি, ইন্টারনেটে তথ্য রাখার পাশাপাশি গ্রামের মানুষের হাতের কাছে ভূমি বিষয়ক ডিজিটাল তথ্য অবশ্যই থাকতে হবে। ব্যবস্থাটি এমন হতে হবে যে, খুব সহযেই নির্দিষ্ট জমির পুরো তথ্যটি তার কাছে চলে আসে। একই সাথে মালিকানার বদল বা অন্য কোনো রেকর্ডের পরিবর্তনও সাথে সাথে আপডেট করতে হবে। ফলে ভূমি নিয়ে জালিয়াতি-প্রতারণা করার কোনো সুযোগ থাকবে না।’
ভূমি নিবন্ধন ও জরিপ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক কাজী সালেহ আহমেদ জানান, জনগনকে সম্প–র্ণ ডিজিটাল সেবা দিতে হলে ভূমি সংক্রান্@ সবধরনের নকশা (স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সংগৃহীত চিত্র ভিত্তি করে তৈরি ডিজিটাল নকশা) ডিজিটাল করতে হবে। এছাড়া সেটেলমেন্ট প্রিন্টিং প্রেসের সনাতনি পদ্ধতিতে তৈরি জমির মানচিত্রের পরিবর্তে ডিজিটাল পদ্ধতি করতে হবে।
তিনি বলেন, নিবন্ধনসহ নামমাত্র কিছু কাজকর্ম কম্পিউটার বেইজ হলেই ভূমি সংক্রান্@ অনিয়ম দুর্নীতি কমবে না। এজন্য জমি রেজিস্ট্রি, হস@ান্@র, উত্তরাধিকার, বণ্টন, দান রেকর্ড, মামলা-মোকদ্দমা, ব্যাংক ঋন, আইনী ব্যবস্থা ইত্যাদি সবকিছুই ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে হবে।
ভূমি দলিল নিবন্ধন পদ্ধতি আধুনিকায়ন ও ডিজিটালাইজেশন কর্মস–চি বাস@বায়ন কমিটির সভাপতি আবু আহমেদ জমাদ্দার জানান, ভূমি ব্যবস্থা জিআইএস ( ভৌগলিক তথ্য ব্যবস্থা) প্রযুক্তিনির্ভর ডাটাবেজভিত্তিক হবে। পুরো কাজ সম্পন্ন হতে একটু দেরি হলেও এতে জমির রেজিস্ট্রি ও নকশা থেকে শুরু করে দেশের প্রতিইঞ্চি ভূমির ডিজিটাল নকশা থাকবে। সেটেলমেন্ট প্রিন্টিং প্রেসের সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে নতুন করে প্রমাপ অর্জনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।একই সাথে জমিসংক্রান্@ সব তথ্য ইন্টারনেটের সহযোগীতায় কমপিউটারে সংরক্ষণ করা হবে এবং জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। হাতে লেখা দলিল না থাকলেও মহাফেজখানার জন্য হাতে লেখা বালাম বই সংরক্ষণ করা হবে।
একই সাথে দলিল রেজিস্ট্রি হওয়ার পর ম–ল দলিল, দাতা-গ্রহীতার স্বাক্ষর, ছবিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয় কম্পিউটারে স্ক্যান করে রাখা হবে কেন্দ্রীয় সার্ভারে। এরপর দলিলে উলি–খিত দাতা-গ্রহীতার নাম-ঠিকানা, মৌজার নাম, জমির দাগ নম্বরসহ সংশি–ষ্ট বিষয় নিয়ে ডেটাবেইসের মাধ্যমে একটি ইনডেক্স (স–চিপত্র) করা হবে। পরে রেজিস্ট্রি করা দলিল নম্বরের ভিত্তিতে একটি ইউনিক আইডি সংরক্ষণ করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে এখানে আর কোন অনিয়ম দুর্নীতির সুযোগ থাকবে না বলে তিনি জানান।
Comments
замки аблой
аварийное вскрытие авто
video-stb.ru/.../...
подробно
video-stb.ru/.../...
RSS feed for comments to this post