লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা শিক্ষা অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজসে একটি মহল চাতাল হিসেবে ব্যবহৃত, দরজা-জানালা ও বেড়াবিহীন একটি চালা ঘরকে অবৈধ পন্থায় বিদ্যালয় হিসেবে জাতীয়করণের জন্য পায়তারা চালায় ...! অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় যখন এই চাতালে ঝুলানো হয় বিদ্যালয়ের নামে একটি সাইনবোর্ড। শুধু কি তাই ? অভিযোগ আছে, অবৈধ পন্থায় শিক্ষক নিয়োগ দেয়া নিয়ে চলে মোটা অংকের আর্থিক লেনদেন ...!
শুধু এটিই নয়, উক্ত উপজেলায় প্রায় ৩০টির মত এরকম কার্যক্রম বিহীন বা অসম্পূর্ণ বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানা যায়। শিক্ষা খাতের এই অনিয়ম, দুর্নীতি দেখে চুপ থাকতে পারেননি ঐ গ্রামেরই শিক্ষিত ও সচেতন যুবক মোঃ রকিবুল হাসান আশরাফী। উক্ত ঘরটির ছবিসহ ইমেইল পাঠিয়ে টিআইবি’তে অভিযোগ করেন তিনি।
এলাক-এ অভিযোগটি আসার পর অভিযোগকারীর সাথে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জেনে পরবর্তীতে এই মর্মে পরামর্শ প্রদান করা হয় যে, পাটগ্রাম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবং জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট লিখিতভাবে উক্ত অভিযোগটি করতে হবে। পাশাপাশি দুদক বরাবরও লিখিতভাবে অভিযোগ দিতে এবং সাংবাদিকদের মাধ্যমে গণমাধ্যমে প্রকাশের জন্য ভ‚মিকা নিতে পরামর্শ প্রদান করা হয়।
রকিবুল হাসান কাংক্ষিত লক্ষ্য নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমে গেলেন! পরামর্শকৃত কয়েক প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পূর্বেই অভিযোগ করেছিলেন, অবশিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছেও লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন স্থানীয় এবং জাতীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় উক্ত বিষয়টি ব্যাপক আকারে প্রচারিত হয়।
এর মধ্যে দৈনিক সমকাল, দৈনিক মানবকন্ঠ, দৈনিক সকালের খবর, দৈনিক জাগরণ, রংপুর টাইমস্, নিউজ বিজয়, যমুনা টিভি, এটিএন বাংলা ইত্যাদি সংবাদ মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়।
এদিকে এলাক ফ্যাসিলিটেটর ডিসি অফিসে অনুষ্ঠিত এনজিও কো-অর্ডিনেশন মিটিং-এ এডিসি (জেনারেল) মহোদয়ের উপস্থিতিতে উক্ত অভিযোগের বিষয়ে আলোচনা করেন। এডিসি (জেনারেল) মহোদয় উক্ত বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হবে বলে আশ^াস প্রদান করেন।
পরবর্তীতে বিষয়টি ডিসি মহোদয় অবগত হন এবং সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে কড়া নির্দেশ প্রদান করেন। ইউএনও মহোদয় নির্দেশ পেয়ে দ্রুত অভিযোগকারীর সাথে যোগাযোগ করে আস্বস্ত করেন যে, উক্ত চালা ঘরটিকে কোনভাবেই বিদ্যালয় হিসেবে জাতীয়করণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হবেনা।
দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে জয়ী হন রকিবুল হাসান আশরাফী !!
আর সমাজ তথা রাষ্ট্র রক্ষা পেয়েছে শিক্ষার নামে বানিজ্য ও বিপুল আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে।