আমি উপস্থাপনা ভাল করতে পারি না, তবুও বছরে ২০/২৫ টি ছোট-বড় উপস্থাপনা করে থাকি। তবে একুশে ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সালের উপস্থাপনা বলি বা সঞ্চালনা বলি, আমার জীবনের অন্যতম একটি সেরা পাওয়া। এটি ছিলো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য সেবাগ্রহীতা আর সেবাদাতাদের একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব। যার প্রতিটি পদক্ষেপ আমাকে মুগ্ধ করেছিলো, উৎসাহ যুগিয়েছে সামনে ভাল কিছু করার জন্য।
২০-২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ জেলা প্রশাসন বাগেরহাট ও সনাক আয়োজিত তথ্য মেলার দ্বিতীয় দিনে আয়োজন করা হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, বাগেরহাট সদর; উপজেলা ভুমি অফিস, বাগেরহাট সদর ও জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের কার্যক্রম উপস্থাপন ও প্রশ্নোত্তর পর্ব। প্রথমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার সিটিজেন চার্টার ও দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম উপস্থাপন করেন, পরে সহকারি কমিশনার (ভূমি) তার কার্যক্রম ও আওতা উপস্থাপন করেন এবং সর্বশেষ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা তাঁর কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাঁর নিকট যে সকল প্রশ্ন করা হয়েছিলো তা মনোযোগীভাবে শুনে দক্ষতার সাথে প্রশ্নের উত্তর দেন। যে সকল প্রশ্ন তাঁর অফিসের আওতায় নয়, সেগুলো কোন উত্তর দিবেন না বলে সরাসরি জানিয়ে দেওয়াতে প্রশ্নকারীগণ খুশি না হলেও অখুশি হতে দেখিনি। সহকারি কমিশনার (ভূমি) বাগেরহাট সদরে নতুন হলেও যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁর উত্তরেও জনমনে দুর্নীতিবিরোধী মানুষ হিসাবেও পরিগণিত হতে পারেন বলে ধারণা করছি, তবে সময় সব কথার উত্তর বলে দেয়। সময় কখনও মিথ্যাকে আকড়ে থাকে না।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার নিকট আমার নিজের প্রশ্ন ছিলো, গত ডিসেম্বরে দৃক গ্যালারীতে দেখেছিলাম একটি দুর্নীতির ছবি, যা কিনা বাগেরহাট জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের কোন এক কর্মচারীর। বিষয়টি আপনার অবগত আছে কিনা? তিনি কথাটির সততা স্বীকার নিশ্চিত করে বলেন, কর্মচারীটি অসুস্থ তাই এমন হয়। আর হবে না বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। তাছাড়া আরো এক কর্মীর দুর্বব্যহারের কথা উঠে আসলে তিনি এই ব্যাপারে জানেন এবং পদক্ষেপ নিবেন বলে জানান। সর্বোপরি, প্রশ্নোত্তর পর্বটি ছিলো এক কথায় অসাধারণ।
বাগেরহাটের দুর্নীতির ছবিটি আমাদের যে অনুজ তুলেছিলো দুর্নীতি বিরোধী চেতনাকে ধারণ করে তাকে এই ব্লগের মাধ্যমে ধন্যবাদ দিতে চাই।
এমন প্রশ্নোত্তর পর্ব সনাক বা জেলা প্রশাসক বছরে একবার নয়, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বার বার হওয়া উচিৎ। আর সেখানে জেলা পুলিশ, প্রধান হাসপাতাল, কাস্টমস ও ভ্যাট, আয়কর কর্তৃপক্ষ এবং যাদের সম্পর্কে জনগণের ধারণা রয়েছে যে তাঁরা আকন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত তাদের বার বার উপস্থিত হয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সুন্দর ও সোনার বাংলা হয়ে ওঠার পথকে আরো সমৃদ্ধ করা উচিৎ বলে আমি মনে করি।