প্রতিটি বিষয়ে মানুষ ভেদে মতামত ভিন্ন হবে, এটাই স্বাভাবিক। অন্য একটি বিষয়ে লিখবো ভাবছিলাম, হঠাৎ মাথায় এলো ইয়েসদের অনুপ্রেরণামূলক সম্মাননা প্রদান বিষয়ে কিছু লিখি। অনেক ইয়েসদের মতামত পড়ার বা শোনার সৌভাগ্য হয়েছে। এক্ষেত্রে আমার মতামত হলো, টিআইবি’র এই পদক্ষেপের সাথে আমি শতভাগ সহমত।
মানুষ যে কোন কাজ করে কোন না কোন স্বার্থে। আমি স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করি একটি স্বার্থে, সেই স্বার্থটি হলো, সুন্দর একটি দেশ পাবার স্বার্থ। আমার দেশ সুন্দর হলে আমার পরবর্তী প্রজন্ম অবশ্যই আরো বেশি সুন্দর-সুখী-দুর্নীতিমুক্ত জীবন-যাপন করতে পারবে। এই ধরণের কাজ করার ফলে যদি কেউ বা কোন প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি দেয় তবে সেটি বাড়তি শক্তি যোগ করে, পাশাপাশি কাজের গতি আরো বেড়ে যায়, আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যায়।
নিজের কথা একটু বলতে হয়। যখন ২০১৪ সালে শ্লোগান প্রতিযোগিতায় প্রথম হই, তারপরে কাজের গতি বেড়েছিলো কিনা জানি না তবে প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণের আকাঙ্খা বেড়ে গিয়েছিলো। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে আলোকচিত্র প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করার সাহস পাই এবং বিশেষ মনোনয়ন পাই। তারপরেই তাইওয়ানে যাওয়ার জন্য নির্বাচিত হই। সব কিছু স্বপ্নের মতো লাগলেও এগুলো আমার কাজের গতিকে বাড়িয়ে দিয়েছে নিঃসন্দেহে বলতে পারি। যদিও রচনা প্রতিযোগীতায় কোন প্রকার পুরষ্কার না পেলেও কাজের গতিকে মন্থর করতে পারে নি।
একজন খুব ভাল মানুষ ও সরকারি কর্মকর্তার সাথে আমার একটা ভাল সম্পর্ক আছে। তাঁকে আমি যথেষ্ট শ্রদ্ধাও করি। তিনি একদিন আক্ষেপ করে বলছিলেন, সুরুজ সৎভাবে সারা জীবন কাজই করে গেলাম, কোন স্বীকৃতি পেলাম না। কিছু এনজিও কাজের স্বীকৃতি দিলেও সরকার কোন স্বীকৃতি দেয় না। তাঁর কথায় যথেষ্ট খারাপ লেগেছিলো।
যখন শুনলাম টিআইবি অনুপ্রেরণামূলক সম্মাননা প্রদান করবে তখনই ভেবেছিলাম – এটা ইয়েসদের কাজের স্বীকৃতি। এটির প্রয়োজন রয়েছে, কাজের গতি বাড়ানোর জন্য । ভাল কাজের স্বীকৃতি পেতে সকলেই চায় – কেউ প্রকাশ্যে, কেউ অন্তরে। স্বীকৃতি চায় না, এমন মানুষ মনে হয় খুব কম আছে।
আশা করি, এই স্বীকৃতি প্রাপ্তির মাধ্যমে ইয়েসদের কাজের গতি বাড়বে, জানার আগ্রহ বাড়বে, দায়িত্বশীল থেকে আরো বেশি দায়িত্বশীল হবে আমাদের ইয়েস বন্ধুরা। আর একটি কথা মনে রাখা অতি বেশী প্রয়োজন, তা হলো এই স্বীকৃতি আমাদের যেন কোন প্রকারে অহংকারী করে না তোলে। অহংকার পতনের মূল।
নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে অন্য কাজের ক্ষেত্রে, যে ছেলেটি/মেয়েটি কোন দিন দায়িত্ব নিতে চায় নি বা ভয় পেত দায়িত্ব নিতে তাকে জোর করে কোন দায়িত্বশীল কাজে দিলেই স্বেচ্ছাচারী মনোভাব বা অহংকারী হয়ে ওঠে। তখনই আমাদের বা আমাকে লজ্জায় পড়তে হয়, ভুল সিদ্ধান্তের জন্য। আমার বিশ্বাস, আর দশটি সংগঠনের মতো নয় টিআইবি, তাই অহংকারী হওয়ার প্রশ্নই আসে না। সেই বিশ্বাস নিয়েই বলছি, কাজের গতি বাড়বেই, সুন্দরভাবে হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাবে ইয়েস গ্রুপ, এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
আলো আসবেই, বিশ্বাস হৃদয়ে।