অনেক সভা-সেমিনার, মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য হয়েছে। কিন্তু গত ২৭-১০-২০১৬ইং এর বন্ধন ছিলো একেবারেই ভিন্ন ধরণের। ভিন্ন মাত্রার প্রতিবাদ ও ন্যায্য দাবি নিয়ে ছিলো আমাদের নৌকাবন্ধন বা নৌকা র্যালী, যা-ই বলি না কেন। সকালে বৃষ্টির কারণে আমদের প্রোগ্রাম বাতিল হওয়ার উপক্রম।বশির ভাইকে ফোন দিতে বললেন, নৌকাবন্ধন না হোক আলোচনা সভা হবে, কিন্তু কিছু তো একটা হবে।
তখনও ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছে, তাই মাথায় নিয়ে রওনা দিলাম টিআইবি অফিসের উদ্দেশ্যে। অটো রিক্সায় কিছুটা ভিজে যখন বাগেরহাটের কাছাকাছি, তখন বৃষ্টি নেই। বশির ভাই জানালেন নৌকাবন্ধন হবে। আমার মনে হয়, সৃষ্টিকর্তাও চেয়েছেন যে, আমরা যেন আমাদের ন্যায্যতার জন্য এমন একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করি, তাই তো তিনি ঠিক সময়ে আবহাওয়া আমাদের অনুকূলে এনে দিলেন।
অন্যান্য প্রোগ্রামের তুলনায় উপস্থিতি বেশি, সকলের মধ্যে অন্য রকম একটি উৎসাহ কাজ করছিলো। একটি নৌকা সাংবাদিকদের জন্য এবং ছয়টি নৌকাতে আমরা, মোট সাতটি নৌকা নিয়ে আমদের নৌকাবন্ধন শুরু হলো দড়াটানা ব্রিজ থেকে। নদীর পাড়ের মানুষেরা আমাদের প্রতিবাদী নৌকাবন্ধন দেখছেন উৎসুক চোখে, কেননা বাগেরহাটের ইতিহাসে এটি-ই প্রথম বারের মতো নৌকা করে প্রতিবাদ জানানো।
এই ভিন্ন ধরণের আয়োজনের কারণ ছিলো বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে পানির উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে বাস্তুহারা হবে কয়েক কোটি মানুষ। তখন তাঁরা বাঁচার তাগিদে নৌকা বা অন্য কিছুকে বেছে নিবে, যাতে করে প্রিয় জিবনটা পানির উপর ভেসে থাকতে পারে। বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ আমাদের সভার সাথে একত্নতা প্রকাশ করেন।
আমাদের দাবী হলো, ক্ষতিপূরণ হিসাবে ঋণ নয়, অনুদান চাই; জলবায়ূ পরিবর্তনের দায় উন্নত বিশ্বকে নিতে হবে, কার্বন নি:সরণ কমাতে হবে এবং অভিযোজন প্রক্রিয়ার জন্য ব্যয়িত অর্থ উন্নয়ন তহবিলের অতিরিক্ত অনুদান হিসাবে দিতে হবে।
আমরা সাধারণের মাঝে এই বিষয়টি কিছুটা হলেও বুঝাতে সক্ষম হয়েছি যে, উন্নত বিশ্বের বিলাস বহুল জীবন যাপন ও শিল্পে উন্নয়নের কারণে আমরা কতটা ঝুঁকির সম্মুখীন। আমরা দেখা সফল যতগুলো প্রোগ্রাম আছে তার মধ্যে নৌকাবন্ধন অন্যতম। ধন্যবাদ জানাই আস্ বাংলাদেশ ও ক্লিন নামক এনজিও দুটিকে যারা আমাদের সাথে একত্রে এই আয়োজন করেছেন। আমাদের ন্যায্যতার জন্য আমরা এই প্রতিবাদ অব্যাহত রাখবো-ই।