হাজীরা মহান আল্লাহর মেহমান হিসেবে গন্য হয়। আর সেই মেহমান দের সেবা করার সুযোগ পেয়েছিলাম বাংলাদেশ স্কাউট্স বাগেরহাট জেলা রোভারের কোঠা অনুযায়ী সরকারি পি.সি কলেজ রোভার ইউনিট থেকে হাজী ক্যাম্পে রোভার স্কাউটদের সেবাদান কার্যক্রমে ৬ ই আগস্ট ২০১৬ থেকে ১৩ ই আগস্ট ২০১৬ তারিখ পর্যন্ত হাজী ক্যাম্প,আশকোনা,এয়ারপোর্ট ঢাকাতে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে হাজীদের বিভিন্ন সেবা দিয়েছি। হাজী ক্যাম্পে হাজীদের সেবা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ,রোভার স্কাউট, আনসার বাহিনি, আঞ্জুমান মুফিদুল নামে একটি সংগঠন কাজ করে। রোভার স্কাউটরা হাজীদের বিভিন্ন ভাবে সেবা দেয়। হাজীদের ব্যাগ বহন, হাজীদের ডরমেটরীতে পৌছে দেওয়া, লিফটে উঠানামায় সহায়তা, আত্বীয়স্বজনদের সাথে দেখা করার ব্যাবস্থা করা,ইমিগ্রেশনে সহায়তা করা, তথ্য সেবা দেওয়া, হারানো জিনিস কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে হাজীদের মাঝে পৌছে দেওয়া ইত্যাদি।
> আমার ব্লগের প্রধান আলোচনা হল - ইমিগ্রেশন সেন্টার ও হাজীদের নিরাপত্তার পদ্ধতি নিয়ে হাজীদের ভোগান্তির চিত্র-
বাংলাদেশ সরকার এ বছর হাজীদের হজে যাওয়ার জন্য যে ব্যাবস্থাপনা হাতে নিয়েছে তা সত্যিই প্রশংশনীয় ।
তবে, হাজীদের জন্য ভোগান্তির যে চিত্র আমার চোখে পড়েছে তা হল-
> বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর সকল হজ্জ যাত্রীদের ইমিগ্রেশন হজ্জ ক্যাম্প,আশকোনাতে হয়েছে। এই ইমিগ্রেশনে রোভার স্কাউটরা ইমিগ্রেশনের বাইরে দায়িত্ব পালন করে এবং আঞ্জুমান মুফিদুলের লোকজন ভিতরে দায়িত্ব পালন করে এবং আনসার বাহিনীর লোকেরাও ভিতরের দায়িত্বে থাকে। বাইরে যখন রোভার স্কাউটের সদস্যরা হাজীদের ব্যাগ বহনসহ শৃংখলা জনিত সেবা দেয় তখন ভেতরে আঞ্জুমান ও আনসার বাহিনীর লোকজন হাজীদের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাবে অর্থ আদায় করে। এই অমানবিক অর্থ আদায়ের চিত্রটি চোখে পড়ে একজন সিনিয়র রোভার ভাইয়ের । তিনি হঠাৎ করে ইমিগ্রেশনের ভিতরে প্রবেশ করে এর প্রতিবাদ করেন এবং এক পর্যায়ে বাংলাদেশ বিমানের একজন অফিসার ও পুলিশের একজন এস আই কে বিষয়টি অবগত করেন । তারপর সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২ জন রোভার কে ভিতরে থাকতে বলা হয়। তখন আমি ও আরেকজন রোভার আমরা ভেতরে থাকি। ভেতরে থেকে আমরা হাজীদের বহির্গমন নামে একটি কার্ড পূরন করে দেই। আমরা ভেতরে থাকাতে ওদের অনৈতিক কাজে ভাটা পড়ে। যেহেতু ভেতরে ওদের তুলনায় আমরা সংখ্যায় কম হওয়াতে ওরা চেষ্টা করে আমাদের সরানোর জন্য। কিছুক্ষণ পর ওরা বিভিন্ন ইস্যু দেখিয়ে আমাদের সাথে বিবাদ সৃষ্টি করে এবং এতে করে হাজীদের বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতে পড়তে হচ্ছিল। সুতরাং হাজীদের কথা চিন্তা করে ওদের সাথে ঝগড়া বিবাদ করলাম না। পরবর্তিতে রোভার স্কাউটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ কে বিষয়টি অবগত করে আমরা বেরিয়ে আসলাম।পরে জানতে পারলাম বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের লোকজন ওদের অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত আছে।
ভোগান্তির আরেকটি যে চিত্র আমার কাছে খারাপ লেগেছে তা হলো - নিরাপত্তা বিষয়ক ব্যাবস্থাপনা।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে জঙ্গিবাদ একটি বড় ইস্যু হিসেবে দেশে নিরাপত্তা ব্যাবস্থা বাড়ানো হয়েছে ।
তারই সুত্রপাত ধরে - হাজী ক্যাম্পে হাজীদের আত্বীয় স্বজনদের ভেতরে প্রবেশের বিষয়টি এবং ভেতরে থাকার বিষয়টি জটিল হয়েছিল। যে কারনে বয়স্ক হাজীদের একটু কষ্ট করতে হয়েছে। যদিও এগুলো করা হয়েছে হাজীদের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে। এখানে যদি নিরাপত্তার বেষ্টনি অন্য ভাবে সাজানো যেত ,যেমন- প্রধান গেট থেকে যখন কোন লোক প্রবেশ করবে তখন তার পরিচয় নিশ্চিত করে তাকে ভিতরে পাঠালে হয়তো হাজীরা একটু সস্তি পেত ।
সর্বশেষ বলতে হয়- হজ যাত্রীগণ মহান আল্লাহর মেহমান। তাদের পাশে থেকে ৭ দিন সেবাদান কার্যক্রমে অংশগ্রহন করার সুযোগ পেয়ে নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হয়েছে । স্কাউট্স সেবায় নিয়োজিত........
ধন্যবাদ, বাংলাদেশ স্কাউট্স।