সকল মানুষেরই কিছু স্বপ্ন থাকে। স্বপ্নের বিভন্ন ধরণ থাকে তাঁর মধ্যে একটা হলো কর্ম কেন্দ্রিক স্বপ্ন। অর্থাৎ যে যেখানে কাজ করে সে সেই কেন্দ্রিক একটা স্বপ্ন লালন করে। আর স্বপ্ন দেখার কারণ হলো কোন একটা বিশেষ কিছু আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে পাওয়া এবং তৃপ্তির ঢেকুর তোলা। একটা ভালো লাগা নিজের মধ্যে তৈরি হওয়া যা মন থেকে শুরু হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়বে।
একজন কৃষক কিন্তু স্বপ্ন দেখে তার ক্ষেতটা সবুজে ভরে উঠবে।ধান গাছগুলো একে অপরের সাথে জড়া-জড়ি করে বেড়ে উঠবে। একজন গায়ক স্বপ্ন দেখে মানুষের মুখে-মুখে ভিড়ার মত একটা গান সে গাইবে। একটার পরে আর একটা। একজন লেখক কিংবা চলচ্চিত্রকারও এমন কিছু বিশেষ সৃষ্টি রেখে যেতে চায়। একজন ব্যাংকার যেমন স্বপ্ন দেখেন পদান্নতি পাওয়ার জন্য আরো ভালো কাজ কিভাবে করা যায়। তেমনি একজন উন্নয়ন কর্মীও উন্নয়নের একটা ভালো মডেল দাঁড় করাতে চায়। একজন খেলোয়ার আরো, আরো ভাল খেলতে চায়।
এটাকে এক ধরণের প্রতিযোগিতা বলা যেতে পারে। সুস্থ প্রতিযোগিতা। কর্ম কেন্দ্রিক এই স্বপ্ন তাকে কাজ করার তাগিদ দিচ্ছে। তাঁর দায়িত্বের যায়গাটা দেখিয়ে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত।সে আরো উপরে উঠতে চাচ্ছে তাঁর দায়িত্ব ও পরিশ্রমের বদৌলতে।
কিন্তু এর বাইরে একটা শ্রেণী থেকে যাচ্ছে যারা কর্ম কেন্দ্রিক স্বপ্ন দেখছে কিন্তু সেটা কেবল চাকরি পাওয়া পর্যন্ত। তাঁর পরেই যেন তাদের স্বপ্নটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। সরকারি চাকরি পেতে হবে। আরো স্পেসিফিক করে বললে হয়তো প্রশাসনে যেতে হবে বা কাস্টম’স এ যেতে হবে এমন। হয়তো ক্ষমতা পাওয়া যাবে, অর্থ আসবে এজন্য। কিন্তু এমন স্বপ্ন কেউ দেখছে না যে, প্রশাসনে যেয়ে আমি মানুষের হয়রানি কমাবো। কাস্টম’স কর্মকতা হয়ে কোন কালোবাজারী পণ্য দেশে ঢুকতে দেব না, তাই কাস্টম’স এ চাকরি করবো।
বিসিএস ক্যাডাররা যদি অন্তত এমন একটা করে স্বপ্ন দেখতো তাহলে কিন্তু দুর্নীতি অর্ধেক কমে যেত। জোর গলায় যদি বলত যে, আমার টেবিলে নিদিষ্ট সময়ের বাইরে কোন ফাইল পড়ে থাকবে না তাহলে দেশটা কোথায় যেয়ে দাঁড়াতো। যদি ঠিক-ঠাক তার দায়িত্ব পালন করে একটা তৃপ্তির ঢেকুর তুলল? যদি নিজ নিজ দপ্তর বা অফিসকে উপরি পাওনার উপরে নিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দিত? সোনার বাংলা তখন আর স্বপ্ন নয় বাস্তব হতো।