পুলিশকে রানার্স আপ করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পাসপোর্ট অফিস। এর অর্থ এই নয় যে, পুলিশ দুর্নীতি কম করেছে বরং আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুর্নীতি বাড়লেও পাসপোর্ট অফিসের সাথে পারেনি। এর পাশাপাশি শিক্ষা খাতের লোকেরাও কম যায় না, যা করে হোক তারা তৃতীয় অবস্থানে আছে জেনে দুর্নীতিবাজ অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারি গাল ভরে বলার সুযোগ পাবে - প্রথম তো আর হই নি। দুর্নীতি কমই আছে। কিন্তু সেই সব নির্বোধেরা জানে না, দুর্নীতি তো দুর্নীতিই, এর আর কম বেশী কি??
যে কারণে আমার এত কথা বলা। আমি একটি স্বাধীন কমিশন চাই, কিছু কিছু কমিশন আছে নামে স্বাধীন কিন্তু ক্ষমতাসীনদের পকেট কমিশন, তেমন কমিশন চাই না। সম্পূর্ণ নতুন, স্বাধীন একটি কমিশন চাই যার নাম হবে - ঘুষ আদায় কমিশন। এই কমিশনের কাজের আগে কারা দায়িত্বে থাকবে সেটা বলা দরকার। এখানে সর্বোচ্চ সৎ অফিসারদের নিয়োগ দিতে হবে। ঘুষের কারবারে অসৎ অফিসার দিয়ে কাজ হবে, কমিশনের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে ।
চাকুরির ক্ষেত্রে এই কমিশন বেতন, বোনাস, ঘুষ খাওয়ার স্কোপ, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি করার সুযোগসহ যাবতীয় সুযোগ বিচার বিশ্লেষণ করে প্রতিটি নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট হারে ঘুষ ধার্য করবে এবং নিজ দায়িত্বে প্রচার করবে। এখানে আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে চাকুরি দিতে হবে। সৎ অফিসার নিয়োগ না দিলে সিরিয়াল ঠিক রাখা যাবে না। যদিও এমন অফিসারেরা অমবশ্যার চাঁদ।
পাসপোর্ট হোক বা পুলিশ, আদালত কিংবা শিক্ষা, হোক সে বিআরটিএ, ভূমি বা স্বাস্থ্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে যে সকল কাজের জন্য ঘুষ দিতে হয়, তার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টানানো থাকবে দৃশ্যমান স্থানে। একজন সৎ অফিসার সে ঘুষের টাকা সংগ্রহ করে সিরিয়ালি কাজ করানোর ব্যবস্থা করবে।
কেননা, একটি নির্দিষ্ট কাজের জন্য একেক জনের কাছ থেকে একেক পরিমাণের ঘুষ নেওয়া হয়। এতে করে সেবাগ্রহীতা চরম বৈষম্যের শিকার হন। তাছাড়া গোপনে ঘুষ নিলে একটা গোপনীয়তার সংস্কৃতি সৃষ্টি হচ্ছে।
টিআইবির মতো প্রতিষ্ঠানকে ঘুষের র্যাংঙ্কি করতে হচ্ছে, ঘুষের পরিমাণ বের করতে হচ্ছে, গবেষণা করতে হচ্ছে, এসবের কি দরকার? রশিদের মাধ্যমে ঘুষের লেনদেন হবে, রশিদ ছাড়া কোন লেনদেনকে অবৈধ বলে গণ্য করা হবে, বছর শেষে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান তাদের সংগৃহীত ঘুষের পরিমাণ জানাবে এবং কমিশনের কাছে জমা দিবে। কমিশন নিজ উদ্যোগে র্যাংঙ্কি করে জনসাধারণকে জানাবে। প্রতি বছর কমিশন সাধারণ সভার মাধ্যমে ঘুষের পরিমাণ বাড়াতে কমাতে পারবে।
খুব বেশি মজা নিয়ে এই প্রস্তাব করছি তা কিন্তু নয়। সত্যিই আমরা সাধারণ জনগণ খুবই হতাশাগ্রস্থ। ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছি। কোন কাজের জন্য সর্বস্ব বিক্রয় করে যখন টাকা জোগাড় করছি, ঠিক তখন দেখছি এতে হবে না, আরো লাগবে। পাবো কোথায়? সব তো শেষ, আমাদের গ্রাম্য ভাষায়, আমও গেল, ছালাও গেল। শেষমেষ, কোন কূল হলো না। ঘুষের পরিমাণ জানা থাকলে এই হয়রানি হতে হয় না।
তাই আসুন, সমবেত কন্ঠে চিৎকার করে ক্ষমতাসীনদের আসন কাঁপিয়ে দিয়ে বলি, হয় দুর্নীতি পুরোপুরি বন্ধ করো, নয়ত ঘুষ আদায় কমিশন সৃষ্টি করো।