শিক্ষক সর্বজন শ্রদ্ধেয়, সর্বকালে। সেই শিক্ষককে যখন কান ধরা অবস্থায় দেখি, সত্যিই লজ্জায় মাথা নত হয়ে যায়। কে কান ধরাল? একজন সংসদ সদস্য! যখন মহান জাতীয় সংসদে রাজনীতিবিদের চেয়ে ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেশি হয়, তখন তাদের এমন আচরণ আমাদের মেনে নিতে হবে। এরা এতই ক্ষমতাসীন যে, তারা সব সময় আইনের উর্দ্ধে চলার চেষ্টা করে।
হ্যাঁ, শিক্ষক যদি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কোন কথা বলেন, তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেত। আর যে ছাত্রকে শাস্তি দিয়েছেন, তার অভিযোগে ধর্মের ব্যাপারে কিছু উল্লেখ না থাকলেও কে বা কারা পবিত্র মসজিদের মাইক ব্যবহার করে পরিস্থিতি জটিলতর করে করে তুলল। তদন্তের ভিত্তিতে এই সব কিছুর সঠিক সুরাহা হওয়া প্রয়োজন, সাথে সাথে যাবতীয় প্রক্রিয়া মিডিয়ার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের নিকট পৌঁছে দিতে হবে।
একটা অপ্রাসঙ্গিক গল্প মনে পড়ছে, ক্লাসের সবচেয়ে ভাল ছাত্র লেখা-পড়া করে ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, বড় সরকারী কর্মকর্তা হয়। দ্বিতীয় স্টেজের ছাত্ররা রাজনীতি করে নেতা হয়, ক্ষমতা অর্জন করে আর থার্ড গ্রেড মার্কা ছাত্ররা ক্যাডার হয়। পরে ক্যাডাররা নেতাদের নিয়ন্ত্রণ করে, নেতারা ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণ করে। বেসিক্যালি, থার্ড ক্লাসরা পুরো সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করে। এটা গল্প, এমন এ দেশে হোক, আমরা কখনও চাই না।
ব্যক্তিগতভাবে আমি কখনও শিক্ষক হতে চাইনি। দেখেছি শিক্ষকরা শুধু সম্মান নিয়ে, অনাহারে, আধ পেট খেয়ে বেঁচেছেন। তাই, পারিবারিক চাপে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা এমনভাবে দিয়েছিলাম যে, পাস না করি। আর এই ঘটনা দেখার পরে, শুধু আল্লাহ আল্লাহ করছি যে, যাই ই হোক যেন শিক্ষক হতে না হয়।
সব কথার শেষ কথা, এই ঘটনার সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। দোষী সকলের বিচার হোক প্রচলিত আইনে। আইনে সঠিক প্রয়োগ দেখতে চায় - বাংলার মানুষ। শিক্ষকের অপমান অথবা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া, সকল অপরাধের সুষ্ঠু বিচার চাই।