প্রকাশকাল: ১৮ নভেম্বর ২০২৪
প্রেক্ষাপট
গণ-আন্দোলনের ফলে কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অভূতপূর্ব অর্জন। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহে নজিরবিহীন সহিংসতা, রক্তপাত ও ত্যাগের বিনিময়ে এ বছরের ৫ আগস্ট কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন ঘটে, এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেন; বর্তমানে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যসংখ্যা প্রধান উপদেষ্টাসহ ২৯ জন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার মূল প্রত্যাশা একটি বৈষম্যহীন, সম-অধিকারভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার উপযোগী রাষ্ট্রকাঠামো এবং নতুন রাজনৈতিক ও সামাজিক বন্দোবস্তনিশ্চিত করা, যার মূল অভীষ্ট জনপ্রতিনিধিত্ব, সরকার ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও চর্চায় আমূল পরিবর্তন যেখানে জনগণের রায় ও অর্পিত ক্ষমতায় এবং জনগণের কাছে কার্যকর জবাবদিহিতার মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হবে।
গবেষণার ফলাফল
অন্তর্বর্তী সরকার
১. রাজনৈতিক প্রেক্ষিত
রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার ও নির্বাচনের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন যেসব রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন প্রদান করেছে সেগুলো হচ্ছে গণ অধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, এবং এবি পার্টি। আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং এই ছাত্রসংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের (আওয়ামী লীগের) পুনর্বাসন না করা, মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে তাদের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু, ফ্যাসিবাদী দল ও জোটকে প্রকাশ্যে কর্মসূচি পালনের সুযোগ থাকবে না মর্মে ঘোষণা করা হয়েছে। গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৭ মার্চসহ আটটি জাতীয় দিবস উদযাপন বা পালন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ৩৩টি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে; এর মধ্যে ২৭টিতে ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া চারটি ব্যাংকনোট থেকে শেখ মুজিবের ছবি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা বা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কিভাবে নেওয়া হচ্ছে তা এখনো বিতর্কিত। বিভিন্ন গোষ্ঠী আটটি জাতীয় দিবস পালন না করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। নিষিদ্ধ ঘোষণা সত্ত্বেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে লক্ষ করা যায়। এছাড়া অন্যান্য পেশা ও প্রতিষ্ঠানে দলীয় রাজনীতি বিষয়ে কোনো অবস্থান লক্ষ করা যায়নি।
বিস্তারিত জানতে নিচে ক্লিক করুন-