প্রকাশকাল: ০৭ নভেম্বর ২০২৪
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও খাতসমূহ এবং জনজীবনকে দুর্নীতির প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) সর্বস্তরে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতাসহ সুশাসন ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গবেষণালব্ধ, জ্ঞানভিত্তিক ও অংশগ্রহণমূলক সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে পরিবর্তনের দাবী উত্থাপন ও অনুঘটকের ভূমিকা পালন করে আসছে।
ইতিপূর্বে টিআইবি সংসদীয় আসনভিত্তিক থোক বরাদ্দ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম এবং ই-জিপির মাধ্যমে সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ সুশাসনের চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করতে গবেষণা সম্পন্ন করেছে এবং বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তরণে বহুমুখী অধিপরামর্শ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। যার ধারাবাহিকতায় ৯ অক্টোবর ২০২৪, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীনে সড়ক ও মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায় চিহ্নিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে “সড়ক ও মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ” শীর্ষক গবেষণাটি করা হয়েছে। গবেষণাটির পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ও অন্যান্য নথিপত্র টিআইবির ওয়েবসাইটেও বিদ্যমান।
গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, অর্থনৈতিক উন্নয়নকে গতিশীল করা, উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, বাংলাদেশকে সমৃদ্ধশালী ও উন্নত অর্থনীতির দেশে রূপান্তর ইত্যাদি বিষয়সমূহকে যুক্তি হিসেবে দেখিয়ে বিগত দেড় দশকে সড়ক ও মহাসড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে বৈদেশিক ঋণ ও বিনিয়োগনির্ভর অতি উচ্চ বাজেটের মেগা প্রকল্পের পাশাপাশি দেশীয় অর্থায়নে বিপুল সংখ্যক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের সুযোগ থাকলেও এই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে বহুমাত্রিক দুর্নীতি বিদ্যমান, যা এই ভূমিকাকে বাধাগ্রস্ত করে। সড়ক ও মহাসড়ক খাতে রাজনীতিবিদ, সংশ্লিষ্ট আমলা ও ঠিকাদারের ত্রিপাক্ষিক আঁতাতের মাধ্যমে উন্নয়ন কার্যক্রমের নীতি-নির্ধারণ, সরকারি ক্রয়ব্যবস্থা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন-প্রক্রিয়াকে করায়ত্ত করা হয়েছে। ফলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে স্বার্থের দ্বন্দ্ব এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে আইনের লঙ্ঘন, অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ সুশাসনের সকল মানদন্ডে ব্যাপক ঘাটতি চিহ্নিত হয়েছে।
ত্রিপাক্ষিক যোগসাজশের মাধ্যমে সড়ক ও মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা হয়েছে এবং কিছু দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, কর্মকর্তা ও ঠিকাদার অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ নিয়নবহির্ভুত অর্থ উপার্জনের অবাধ সুযোগ করায়ত্ত করেছে। দুর্নীতির লক্ষ্যে উদ্দেশ্য-প্রণোদিতভাবে প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। একদিকে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে অতি উচ্চ ব্যয়ে এ সকল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, অন্যদিকে নির্মিত সড়ক ও সেতুর মান খারাপ হচ্ছে ও টেকসই হচ্ছে না, যা প্রকল্পের কাঙ্খিত উদ্দেশ্য অর্জনকে ব্যাহত করছে। ফলশ্রুতিতে জাতীয় সম্পদের অপব্যবহার ও অপচয়ের অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
পুরো পলিসি ব্রিফের জন্য এখানে ক্লিক করুন