প্রকাশকাল: ২৭ মে ২০২৪
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশের বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি বিবেচনায় জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর অগ্রাধিকার কার্যক্রমের অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি মোকাবিলাসহ জলবায়ু তহবিল ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিতে এখাতে টিআইবি গবেষণা, অধিপরামর্শ ও নাগরিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির জন্য বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪ মে ২০২৪ তারিখে টিআইবি “সবুজ জলবায়ু তহবিলে বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশের অভিগম্যতা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়” শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এ গবেষণার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ) বা সবুজ জলবায়ু তহবিলে বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিতে নিমজ্জিত উন্নয়নশীল দেশসমূহের অভিগম্যতা প্রক্রিয়ায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ বিশ্লেষণ করা এবং গবেষণালব্ধ ফলাফলের ভিত্তিতে সুপারিশ প্রদান করা। তাছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রতিশ্রুত তহবিল সংগ্রহ করে উন্নয়নশীল দেশে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করার ক্ষেত্রে জিসিএফের অবদান বিশ্লেষণ করা হয়েছে। উন্নত দেশ কর্তৃক ২০২০ সাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের জন্য বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতি থাকলেও জিসিএফের মাধ্যমে প্রতিশ্রুত অর্থায়নের মাত্র ২-৩ শতাংশ প্রদান করা হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে অভিযোজনের জন্য ২০৩০ সাল পর্যন্ত বছরে ২১৫-৩৮৭ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হলেও জিসিএফ ২০১৫ সাল থেকে মাত্র ৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার অনুমোদন করেছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রধান তহবিল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে জিসিএফ তৈরি হলেও প্রত্যাশার তুলনায় অর্থছাড়ে বিস্তর পার্থক্য লক্ষণীয়। অন্যদিকে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জিসিএফ ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর পারস্পরিক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে ‘কান্ট্রি ঔনারশিপ’ নিশ্চিত করার কথা থাকলেও জিসিএফ তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে না। ‘কান্ট্রি ঔনারশিপ’ নিশ্চিতে জাতীয় প্রতিষ্ঠানের সরাসরি অভিগম্যতা গুরুত্বপূর্ণ হলেও অধিকাংশ দেশে (৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ) সরাসরি অভিগম্যতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান নেই। জাতীয় প্রতিষ্ঠানের সরাসরি অভিগম্যতা বৃদ্ধিতে ‘রেডিনেস এবং প্রিপারেটরি সাপোর্ট প্রোগ্রাম (আরপিএসপি)’ এর আওতায় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রয়োজনীয় হলেও ‘তহবিল পাওয়ার যোগ্য’ ১৫৪টি দেশের মধ্যে ৯৫টি দেশ (৬১ দশমিক ১ শতাংশ) জিসিএফ থেকে এ ধরনের সহায়তা পায়নি।