প্রকাশকাল: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩
গণতন্ত্র, সুশাসন ও জাতীয় শুদ্ধাচার ব্যবস্থার মৌলিক স্তম্ভগুলোর মধ্যে জাতীয় সংসদ অন্যতম। জনকল্যাণমুখী আইন প্রণয়ন ও সংস্কার, জন-প্রত্যাশা ও জনস্বাথ-সংশিষ্ট বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা ও বিতর্ক এবং জনগণের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবির) অন্যতম লক্ষ্য বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে অপরিহার্য মৌলিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকরতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণে সহায়ক গবেষণা সম্পাদন ও তার ভিত্তিতে অধিপরামর্শ পরিচালনা করা। সরকারের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে এবং দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে সংসদীয় কার্যক্রমের কেন্দ্রীয় ভূমিকার কথা বিবেচনায় রেখে টিআইবি ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকে জাতীয় সংসদের কার্যক্রম নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় একাদশ জাতীয় সংসদের ১ম থেকে ২২তম অধিবেশনের কার্যক্রম ও কার্যকরতা পর্যালোচনার উদ্দেশ্য “পার্লামেন্টওয়াচ” শীর্ষক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়, যা ২০২৩ সালের ০১ অক্টোবর প্রকাশিত হয়।
গবেষণায় দেখা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদে (১ম থেকে ২২তম অধিবেশন) বিভিন্ন কার্যক্রমে ৭ শত ৪৪ ঘন্টা ১৩ মিনিট সময় ব্যয় হয়েছে, যার মধ্যে জনপ্রতিনিধিত্ব ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা কার্যক্রমসমূহ এবং রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা উভয়ক্ষেত্রেই পৃথকভাবে প্রায় এক-চতুর্থাংশ সময় ব্যয় হয়েছে। অন্যদিকে, বাজেট আলোচনা ও আইন প্রনয়ন কার্যক্রমে ব্যয় হয়েছে যথাক্রমে ১৯.২ শতাংশ এবং ১৬.৭ শতাংশ সময়। তবে সংসদীয় কার্যক্রমে বিষয়ভিত্তিক, প্রাসঙ্গিক ও গঠনমূলক আলোচনার পরিবর্তে সরকার ও দলীয় অর্জন ও প্রশংসা এবং প্রতিপক্ষদলের প্রতি আক্রমনাত্মক সমালোচনা প্রাধান্য পেয়েছে।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ৮০ শতাংশই ছিল সরকারের অর্জনবিষয়ক আলোচনা যেখানে দেশের সার্বিক অবস্থার চিত্র এবং দেশের অগ্রগতির জন্য সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনার ঘাটতি লক্ষণীয় ছিলো। আইন প্রণয়ন ব্যতীত প্রায় প্রতিটি কার্যক্রমে সরকারি দলের সদস্য কর্তৃক ৮০ শতাংশেরও বেশি সময় ব্যয় হয়। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা পর্বে সরকারি দলের সদস্যদের বক্তব্যের ৫৭ শতাংশ সময়ই ব্যয় হয় সরকারের অর্জন, প্রধানমন্ত্রী ও দলের প্রশংসা এবং অন্য দলের সমালোচনায়। একইভাবে প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীদের প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রশ্নকর্তারা অধিকাংশ সময় ব্যয় করেছেন সরকারের অর্জন, প্রধানমন্ত্রীর ও দলের প্রশংসা এবং অন্য দলের সমালোচনায়। এ ছাড়া জনপ্রতিনিধিত্বমূলক কার্যক্রমসমূহ তুলনামূলক কম গুরুত্ব পেয়েছে (কার্যক্রম স্থগিত রাখা, চলমান জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ অনালোচিত থাকা ইত্যাদি) এবং সার্বিকভাবে বিগত সংসদগুলোর চেয়ে (নবম ও দশম সংসদ) এই কার্যক্রমসমূহে ব্যয়িত সময় ও অংশগ্রহণের হারও হ্রাস পেয়েছে।
পুরো পলিসি ব্রিফের জন্য এখানে ক্লিক করুন